যৌন সমস্যা
( ১৮+ সেক্স এডুকেশন বিষয়ক আলোচনা)
যৌন সমস্যা নিয়ে আলোচনা দুভাবে হতে পারে ।
(১) শালীনতা বজায় রেখে , মানে আরকি ‘ ধরি মাছ , না ছুঁই পানি ' করে ।
(২) যৌন সমস্যাগুলো নিয়ে সহজ করে আলোচনা করা । এতে অবশ্য কেউ কেউ আলোচনায় যৌনতার আঁশটে গন্ধ পেতে পারেন ।
' ধরি মাছ , না ছুঁই পানি ' মার্কা আলোচনার একটা বিপদ আছে । এমনটাই বিপদে নাকি পড়েছিল ভারতের সঞ্জয় গান্ধীর পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি । উত্তরপ্রদেশের পরিবার পরিকল্পনা কর্মীরা গ্রামের মানুষদের কনডম ব্যবহার নিয়ে ব্যাপক প্রচার চালালেন এবং ফ্রি কনডম বিলি করলেন । বছর দেড়েক পরে কর্মীরা গ্রামগুলোতে সার্ভে করতে গিয়ে অবাক । জন্মহার একটুও কমেনি ।
আবার গ্রামে গ্রামে গিয়ে কর্মীরা জিজ্ঞেস করলেন , তোমরা কনডম ব্যবহার করনি ? গ্রামের লোকরা সমস্বরে জানালেন , হ্যাঁ , যেভাবে বলেছিলেন সেভাবেই আঙুলে কনডম পরে করেছি ।
এই হল অস্বচ্ছতা রেখে বোঝাবার বিপদ । আমরা সহজ করে স্বচ্ছতার সঙ্গে সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনায় যাবো ।
যৌন সমস্যাকে দু'ভাগে ভাগ করতে পারি ।
( ১ ) যৌন অক্ষমতা ( Sexual dysfunction ) এবং
( ২ ) বিকৃতকাম ( Sexual deviation ) ।
আমরা এখানে যৌন অক্ষমতা নিয়ে আলোচনা করব।
যৌন অক্ষমতা প্রধানত দু'রকম ।
১) ছেলেদের ক্ষেত্রে ধ্বজভঙ্গ ( লিঙ্গ শক্ত না হওয়া ) বা ( impotence )
২) দ্রুত বীর্য পতন এবং মেয়েদের বেলায় কামশীতলতা ( figidity ) ।
ধ্বজভঙ্গ দুটি কারণে হতে পারে ।
( এক ) শারীরিক কারণে
( দুই ) মানসিক কারণে ।
শারীরিক কারণগুলো হতে পারে :
১ ) ডায়াবিটিস
২ ) থাইরয়েড সমস্যা
৩ ) কিডনির সমস্যা
৪ ) রক্তহীনতা
৫ ) হার্টের বা লিভারের সমস্যা
৬ ) হাই ব্লাডপ্রেশারের ওষুধ খাওয়া
৭ ) টেনশনের ওষুধ খাওয়া
৮ ) স্টেরয়েড গ্রহণের অভ্যাস
৯ ) বার্ধক্যের কারণে
১০) নানা ধরনের হরমোনের সমস্যার কারণে ।
এইসব শারীরিক কারণে ও উল্লিখিত ওষুধ গ্রহণের কারণে ধ্বজভঙ্গের সম্ভাবনা থাকে শতকরা প্রায় ১০ ভাগ রোগীর ।
আর মানসিক কারণে ধ্বজভঙ্গ হয় শতকরা প্রায় ৯০ ভাগ রোগীর ।
কিছু কিছু ধর্মগুরুদের ও হাতুরেদের ইউটিউব ভিডিওতে ও লেখাপত্তরে আছে - চল্লিশ দিনে এক ফোঁটা বীর্য তৈরি হয় । হস্তমৈথুন ধ্বজভঙ্গ ঘটায় ইত্যাদি ।
এমন ভুল ও মিথ্যে কথায় বিশ্বাস করার কারণে কোনো বিবাহিত যদি বীর্যস্খলনের ভয়ে ভীত হয়ে পড়ে , তবে তার ধ্বজভঙ্গ হতে পারে ।
স্ত্রীর তুলনায় নিজেকে খুব ছোট , হীন মনে করলে স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হওয়ার সময় লিঙ্গ উত্থিত নাও হতে পারে অথবা দ্রুত পতন হতে পারে ।
মিলন স্থায়িত্ব যেখানে ১০-১৫ মিনিট হওয়াটা স্বাভাবিক সেখানে ২-৩ মিনিটে স্খলনকে দ্রুত পতন বলব
পায়ুমৈথুন প্রিয় পুরুষ/ সমকামী স্ত্রীযোনির প্রতি আকর্ষণ অনুভব না করতে পারার কারণে ধ্বজভঙ্গের শিকার হতে পারে ।
পশুদের সঙ্গে সঙ্গম - প্রিয় মানুষ নারীর প্রতি আকর্ষণ অনুভব না করতেই পারে ।
বয়স ৫০ বছর পার হলে ধ্বজভঙ্গের সম্ভাবনা থাকে ।
৬০ - এর পর এই সম্ভাবনা বাড়ে ।
নারীর কামশীলতার কারণ
১ ) পুরুষ সঙ্গীকে কুৎসিৎ - দর্শন মনে করলে
২ ) মনের মিল এবং রুচির মিল একটুও না থাকলে
৩ ) মিলনকালে যন্ত্রণার পূর্ব অভিজ্ঞতা
৪ ) গর্ভবতী হওয়ার ভয়
৫ ) থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা
৬ ) যোনির প্রদাহ
৭ ) কিডনি , হার্ট ও লিভারের সমস্যা থাকলে
৮ ) উচ্চ রক্তচাপ থাকলে
৯ ) বিষণ্ণতার ওষুধ বেশি খেলে
১০ ) ড্রাগের নেশা থাকলে
১১ ) পুরুষসঙ্গী যদি সঙ্গমের এক - দু মিনিটের মধ্যেই বীর্যপাত করে ফেলে প্রতিবারই , তবে নারী সঙ্গম সুখ লাভ থেকে বঞ্চিত হতে হতে কামশীতল হয়ে পড়ে ।
১২ ) নারী সক্রিয় সঙ্গমে ইচ্ছুক কিন্তু পুরুষসঙ্গী একতরফাভাবে নিজের কাজটি করেই নিষ্ক্রিয় হয়ে গেলে নারী কামশীতল হতে পারে ।
১৩ ) আদর - শৃঙ্গারের আগেই পুরুষ এক তরফা সঙ্গম করতে থাকলে নারী আবেগহীন , কামশীতল হয়ে পড়ে ।
১৪) নানা ধরনের হরমোনের সমস্যার কারণে ।
যৌন সমস্যার অনেকগুলো কারণ । তাই, চিকিৎসার ক্ষেত্রে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে ।