পুরুষ ও মহিলাদের সমকামিতা নিয়ে কিছু কথা। ১৮ +
(যারা মনে করেন আপনারা ১৮+ লেখা পড়তে অভ্যস্ত নন , তারা দয়া করে এই লেখা পড়বেন না । যদি কেউ মনে করেন এ ধরনের লেখা আপনার চেতনায় আঘাত করবে আপনি দূরে থাকুন । সমকামিতা একটি স্বাভাবিক যৌন আচরণ এমন যুক্তি যারা দেখাবেন তারাও দয়া করে দূরে থাকুন )
আসেন আপনাদের একটা গল্প শোনাই । গ্রীক পুরাণের গল্প । দেবরাজ জিউস একবার ট্রয় নগরীর প্রতিষ্ঠাতা রাজা ট্রসের পুত্র গ্যানিমিড এর রূপ সৌন্দর্য মুগ্ধ হয়ে তাকে শয্যাসঙ্গী করার বাসনা প্রকাশ করেন এর জন্য তাকে স্বর্গে স্থান দেন । গ্রীক পুরাণের মতে এভাবে শুরু হয় সমকামিতা । এগুলো একটি প্রচলিত কাহিনী সত্যি মিথ্যা জানি না।
আচ্ছা আর একটা গল্প শোনাই , অনেক প্রাচীন একটি গল্প লেজবোস নামক একটি দ্বীপে মহিলাদের মধ্যে প্রথম নাকি সমকামীদের শুরু হয় এজন্য মহিলা সমকামীদের লেসবিয়ান নামে ডাকা হয় । অনেকে এটাকে স্যাফিজম বলে।
গ্রীক মহিলা কবি ছিলেন যার নাম ছিল স্যাফো । এই মহিলা কবি ছিলেন একজন সমকামি । তার নাম অনুসারে স্যাফিজম শব্দটি এসেছে। এই গল্পগুলো সত্যি না মিথ্যা জানিনা ।
এবার আসল কথা নিয়ে আলোচনা করি , সমকামিতা হচ্ছে একটি চরম মাত্রার মানসিক বিকৃতি , যৌনবিকৃতি । এটা এমন একটা অস্বাভাবিক যৌন আচরন যা স্রষ্টার বিধানের পরিপন্থী।
প্রাণীদের মধ্যে স্ত্রী-পুরুষ সৃষ্টি করার উদ্দেশ্য হচ্ছে ওই প্রাণীর বংশ ধারা বজায় রাখা। এটাই হচ্ছে প্রাকৃতিক নিয়ম। যখন কোন ভাবে প্রাকৃতিক নিয়ম ভঙ্গ করা হয়, তখন শুরু হয় বিপর্যয়। সমকামিতা হচ্ছে এই প্রাকৃতিক নিয়ম ভঙ্গ করে অস্বাভাবিক ও বিকৃত যৌন কার্যে লিপ্ত হওয়ার একটি নাম।
বলা যায় এটা হাজার বছরের একটি বিকৃতি। এ বিষয়ে পবিত্র কুরআনে যেমন আছে , বাইবেলেও তেমন আছে , হয়তো অন্য ধর্ম গ্রন্থেও আছে । নবী লুত (আ) এর কওম কে ধ্বংস করা হয়েছে সমকামিতার অপরাধের কারণে , পবিত্র কুরআনে এই ঘটনা আছে । প্রাচীন কিছু গ্রন্থে সমকামিতা নিয়ে লেখা আছে। সব জায়গায় সমকামিতাকে যৌন বিকৃতি হিসেবে বলা হয়েছে।
খুব অল্প সময় হয়, কোন কোন বিজ্ঞানীরা সমকামিতাকে স্বাভাবিক যৌনাচার হিসেবে ধরে নিয়েছেন এর পিছনে অবশ্য কারণ আছে , সভ্য সমাজের মানুষরা মনে করেন , একজন মানুষের আচরণ যতক্ষণ পর্যন্ত অন্য মানুষের জন্য হুমকি না হয় ওই আচরণ নিয়ে তারা তেমন মাথা ঘামানো ঠিক না , এটা তার ব্যক্তিগত অধিকার । সমকামিতা ও এরকম একটি পার্সোনাল প্রাক্টিস যা ,যাদের মধ্যে সংঘটিত হয় এর বাহিরের অন্যের জন্য ক্ষতির কারণ হয় না। তাই তারা এটা কি স্বাভাবিক বলে মনে করে ।
আবার কোন কোন ক্ষেত্রে এটা এমন একটা যৌন অস্বাভাবিকতার মধ্যে পড়ে যায় , যখন এই মানুষটাকে স্বাভাবিক করে তোলার চেয়ে সে যে ভাবে থাকতে চায় তাকে সেভাবে থাকতে দাও এই নীতি ফলো করাটা বেশি সহজ , তখন তাকে এমনি ভাবে থাকতে দেওয়া হয়। বিষয়টি হচ্ছে " তুমি সমকামী , তুমি আমার জন্য ক্ষতির কারণ না , তুমি তোমার মত করে থাকো " । কেউ কেউ তো এক ধাপ এগিয়ে এটাকে জেনেটিক পরিবর্তন ও স্বাভাবিক বিষয় হিসেবে প্রচার চালায় ।
এসব বিজ্ঞানীরা ধর্মীয় বিধি বিধান না মানার কারণে তারা বিষয়টাকে সহজভাবে মেনে নিয়েছে , অর্থাৎ এই সমকামী গোষ্ঠী যেভাবে থাকতে চায় থাকুক। ওরা যেহেতু অন্যদের ক্ষতি করে না ক্ষতির কারণ না তেমনি ভাবে তাদের কে থাকতে দাও।
আমাদের দেশের যারা ধর্ম মানে না বা নাস্তিক তারাও এই বিষয়টাকে ঠিক ওরকমই দেখছে, যে যেভাবে থাকতে চায় তাকে সেভাবে থাকতে দাও যতক্ষণ পর্যন্ত সে অন্যের ক্ষতির কারণ না হয় ।
কিন্তু মাথায় রাখতে হবে আমাদের এই নির্লিপ্ত অবস্থা , যৌন বিকৃত কে কখনো স্বাভাবিক যৌনতায় রূপান্তর করবে না ।
বংশধারা নষ্ট করার মত একটা অস্বাভাবিক প্রকৃতি বিরুদ্ধ প্রক্রিয়াকে আমরা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া বলতে পারি না । বিভিন্ন দেশে এ বিষয়টি আইনসিদ্ধ হলেও অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও এ বিষয়টি বেআইনি ।
অনেকে আছেন যারা সমকামিতায় লিপ্ত তারা স্বাভাবিক জীবনে আসতে চান । কিন্তু কাউন্সেলিং এর মত কোন ব্যবস্থার কথা তারা জানেন না এবং তারা কার কাছ থেকে হেল্প নেবেন তাও জানেন না বলেই তারাও একটি চরম মানসিক কষ্টে ভুগতে থাকেন। অনেক সমকামি আছে যারা মনে করে এটা স্বাভাবিক যৌন সম্পর্ক না, এটা পুরোটা অস্বাভাবিক এবং তারা এই অস্বাভাবিক অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে চান।
যারা সত্যি সত্যি এই অস্বাভাবিক অবস্থা থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে চান তাদেরকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
★ ফ্রী অ্যাসোসিয়েশন
★কাউন্সেলিং
★রিলাক্সেশন এক্সারসাইজ
★ভিজুয়ালাইজেশন
★ মেডিসটিক সাইকোথেরাপি ( মরহুম প্রফেসর এম ইউ আহমেদ স্যারের উদ্ভাবিত )
★ হেটরো সাজেশন , অটোসাজেশন
★ কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি
★ সেক্স থেরাপি
সহ আরো কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করে এই অস্বাভাবিক অবস্থা থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায়। তবে শর্ত হচ্ছে সমকামী ছেলে বা মেয়েকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার জন্য ইচ্ছা থাকতে হবে। অনেক সমকামী ছেলে- মেয়েরা এই পদ্ধতি প্রয়োগ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে ।
সমকামী পুরুষরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অপরের পায়ুপথে সঙ্গম করে। যা কোন স্বাস্থ্যকর যৌন অভ্যাস নয়। কিছু প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তারা যৌন তৃপ্তি লাভ করে থাকে। যেমন
★ এনাল সেক্স
★ ওরাল সেক্স
★ একে অপরের মাস্টারবেশন করিয়ে দেয়া ।
মহিলাদের মধ্যে তারা যৌন তৃপ্তি লাভ করে ঠোঁটের স্পর্শ, স্তন মর্দন, ভগাঙ্কুর নাড়াচাড়া করা , জননাঙ্গে ঘর্ষণ , আর্টিফিশিয়াল মেইল অর্গান ব্যবহার করা, ওরাল সেক্স , একে অপরকে মাস্টারবেশন করিয়ে দেয়া ইত্যাদি।
সমকামী ছেলে মেয়েরা এগুলো কে যৌনতার চূড়ান্ত অবস্থা মনে করে ও তৃপ্তি লাভ করে এবং একটি ছেলে একটি মেয়ের সাথে স্বাভাবিক যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে অনীহা বোধ করে বা সক্ষম হয় না , ঠিক এক ভাবে একটি মেয়ে একটি ছেলের সাথে স্বাভাবিক যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে অনীহা বোধ করে বা সক্ষম হয় না । যদিও বিষয়টি সকলের ক্ষেত্রে এক রকম নয়। অনেকে আছে উভকামী যারা নিজেরা বিয়ে করে ঘর সংসার করছে তার স্ত্রীর সাথে অথবা মেয়েদের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করছে সাথে সাথে সমকামিতার প্রাক্টিস চাল রাখছে ।
সমকামিতার ফলে অনেক মানসিক অসুস্থতা যেমন তৈরি হয় তেমনি অনেক শারিরীক সমস্যার তৈরি হয় সাথে সাথে এইডসের মতো ভয়ঙ্কর রোগ হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায় ।
সমকামীদের মধ্যে অনেক যৌন রোগ , যৌন সমস্যা সহ মনোসমস্যা যেমন: ডিপ্রেশন, অ্যাংজাইটি সহ আত্মহত্যার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি দেখা দেয়।
শেষ কথা একটাই, প্রকৃতি কখনো চায় না তার বিরুদ্ধে আমরা চলি, প্রকৃতির বিরুদ্ধে চললে প্রকৃতি ভয়ঙ্কর প্রতিশোধ নেবেই । আর সমকামী তো হচ্ছে প্রকৃতির বিরুদ্ধে বিকৃত যৌনাচার। সো সাবধান প্রকৃতির শাস্তি থেকে, স্বাভাবিক যৌন জীবনে ফিরে আসার অনেক পথ খোলা আছে ।
লেখক:
মোঃ ফাইজুল হক