" দাগ ছাড়া বেড়ে উঠুক প্রতিটি শিশু "
🔰 ওয়েবফিল্ম: " দাগ "
🔰মূল গল্প ভাবনা : মুহাম্মদ আবু রাজিন
🔰চিত্রনাট্য : কল্লোল কবির
🔰পরিচালনা : সঞ্জয় সমদ্দার
🔰অভিনয়ে : মোশাররফ করিম, আনিসুল হক বরুণ,
আইশা খান, নিশাত প্রিয়ম প্রমুখ।
বর্তমানে আমরা হরহামেশাই খবর শুনতে পাই যে বাচ্চা কুড়িয়ে পাওয়া গেছে। এরকম খবর শুনে যান্ত্রিক জীবনে খনিকের জন্য খারাপ লাগে আবার যে যার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। কিন্তু এর পিছনের গল্প গুলো হয়ত আমাদের মাথায় আসে না। সেরকমেই একটি ঘটনাকে সুন্দর মানবিক আবেদনের সাথে পর্দায় তুলে আনা হয়েছে ওয়েবফিল্ম 'দাগ'
এ যা না দেখলে আসলে বিশ্বাস করা যাবে না। আমাদের সমাজে ঘটে যাওয়া সামাজিক প্রেক্ষাপটের ভিত্তিতে নির্মিত হয়েছে এই ফিল্মটি, যেখানে একজন শিশুর করুণ দৃশ্য পর্দায় ভেসে উঠেছে জন্মের পরেই যার স্থান হয়েছে আস্তাকুঁড়ে।
গল্পের শুরুতেই শহরের একটি ডাস্টবিনে হঠাৎ এক নবজাতক পাওয়া যায়। দায়িত্বরত ওসি আলমগীর ঘটনাস্থলে এসে বাচ্চাটাকে উদ্ধার করে নিজের হেফাজতে হাসপাতালে ভর্তি করে এবং পরবর্তীতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর করে। কিন্তু এরপর এই বাচ্চার দায়িত্ব কে নিবে? শেষপর্যন্ত এই বাচ্চাটার ভাগ্যে কি ঘটে? বাচ্চাটিই বা কাদের? কে তার মা, কে তার বাবা? গল্প আগাতে আগাতে এসব প্রশ্নের জট খুলতে থাকে ধীরে ধীরে।
গল্পের এক পাশে মানবিকতা, মমত্ববোধ এবং মাতৃস্নেহ আবার অপর পাশে ছলোনা, ধোকাবাজি এবং মানসম্মান। সবমিলিয়ে ১ ঘন্টা ২০ মিনিটে চোখ সরানো যায়নি পর্দা থেকে।
এবার একটু অভিনয়ে আসা যাক, মোশাররফ করিম যে যেকোন চরিত্রে সব সময়ের জন্যই পারফেক্ট তার আরেকটি প্রমাণ হয়ে থাকবে ওয়েবফিল্ম ‘দাগ’। এই গল্পে তিনি একজন ওসির চরিত্রে অভিনয় করেছেন যার নাম আলমগীর। তার চরিত্রে জ্ঞানী, রসিক, বিচক্ষণ এবং দক্ষ- এই বিষয়গুলো খুব সাবলীল ভাবেই পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন মোশাররফ করিম । তার সুক্ষ্ম সুক্ষ্ম এক্সপ্রেশন কাহিনিকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে।
এই ওয়েবফিল্মে অভিনয় নিয়ে বলতে গেলে মোশাররফ করিম এর পরেই আইশা খান এর কথা না বললে বিষয় অন্যায়ই হবে। এই ওয়েবফিল্মে আইশা খান এক কথায় দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন। এর আগে তার সৌন্দর্যতা এবং কথা বলার ধরন দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম এবার তিনি মুগ্ধ করেছেন তার অভিনয় দিয়ে। তাছাড়া আনিসুল হক বরুণও তার চরিত্রে অনবদ্য ছিলেন পুরো সিরিজ জুড়ে । বাকিরাও চরিত্র অনুযায়ী ঠিকঠাকেই ছিলো।
সঞ্জয় সমদ্দার সময়ের আস্থাশীল নির্মাতা। তার নির্মিত কাজগুলোর মধ্যে সব সময়ের জন্যই একটা আলাদা ফিল পাওয়া যায়। এই ওয়েবফিল্মটিতেও তিনি তার মেধার ছাপ দেখা গিয়েছে। বিজিএম, কালার গ্রেডিং, সিনেমাটোগ্রাফি সব মিলিয়ে একদম পার্ফেক্ট প্যাকেজ বলা যায়।
ওয়েবফিল্ম - দাগ। (স্পয়লার এলার্ট)
অভিনয়ে - মোশাররফ করিম,আইশা খান, নিশাত প্রিয়ম, সাবেরী আলম, সমু চৌধুরী সহ আরো অনেকে।
পরিচালনা - সঞ্জয় সমদ্দার।
গতকাল চরকিতে মুক্তি পেয়েছে সঞ্জয় সমদ্দারের নতুন এক ওয়েবফিল্ম "দাগ"।মোশারফ করিম অভিনীত চরকিতে ১ম ওয়েব ফিল্ম এটি।
গল্পের শুরুতেই দেখা যায় ডাস্টবিনে একটা বাচ্চা পাওয়া যায়। চারিপাশে অনেক লোকের সমাগম।তাদের মাঝেই একজন সমাজকর্মী যিনি ❝আবাল❞ সংগঠনে কাজ করেন তিনি পুলিশে খবর দিলে ওসি আলমগীর ও তার সহোযোগী পুলিশরা এসে বাচ্চাটিকে নিয়ে দ্রুত হাসপাতালে যান।সদ্য পৃথিবীতে আসা বাচ্চাটির অবস্থা ছিলো অনেক খারাপ।তাকে সুস্থ করে ওসি নিজের দায়িত্বে নিয়ে পরবর্তী সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর করেন।এরপর থেকেই দেখা যায় গল্পের নতুন মোড়।বাচ্চাটির দায়িত্ব নিতে চায় অনেক পরিবার।
এই পৃথিবীতে কেউ একটা শিশুর জন্য দিন রাত আল্লাহর কাছে কান্না কাটি করে যাচ্ছেন তো আবার সেই জন্য আহা সমাজ আহা মানুষ।
কিন্তু গল্পে দেখা মেলে ইরার (আইশা খান)।সেও বাচ্চাটিকে পেতে চায়।সে সর্বক্ষণ বাচ্চাটির আশে পাশে ঘুরঘুর করতে থাকেন।
গল্পে ডাস্টবিনে ফেলে রাখা সেই শিশুকে ঘিরে পুলিশ অফিসার আলমগীর, মোখলেস ও ইরার কর্মকান্ড ছাড়াও পারিপার্শ্বিক অনেক ঘটনা ঘটতে থাকে।ওসি আলমগীর যার নিজের অবহেলার জন্য তার নিজের সন্তান মারা গেলেও, সেই তিনিই রাস্তায় পড়ে থাকা বাচ্চাটিকে সঠিক জায়গায় দেয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছেন।পুলিশ চরিত্রে মোশাররফ করিম তার বুদ্ধিমত্বার অনেক সুন্দর পরিচয় দিয়েছেন।
আমাদের এই সমাজে শুধু নিজেদের মান সম্মান বজায় রাখার জন্য চুনকালি থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য কেউ কেউ অবৈধ সন্তান ডাস্টবিন অথবা রাস্তার পাশে ফেলে রেখে চলে যাচ্ছেন। আর সেই শিশুকে একটা পরিচয় দেয়ার জন্য সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য একটা পরিবার এর হাতে তুলে দেয়ার জন্য এক সন্তান হারানো বাবা ওসি আলমগীর কঠোর পরিশ্রম করেছেন।
গল্পে সহকারী মোখলেস চরিত্রে অভিনেতা কাজী আনিসুল হক বরুণ,একে আজাদ সেতু, নিশাত প্রিয়ম, সাবেরী আলমসহ অন্যরাও ভালো ছিলেন। সবাই তাদের চরিত্রে মানানসই অভিনয় করেছেন।
তাছাড়াও ফিল্মটিতে ক্যামেরার কাজ ও ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বেশ ভালো লেগেছে। ফিল্মটির সংলাপগুলো সব ঠিকঠাক মনে হয়েছে ।
সঞ্জয় সমদ্দার তার দাগ এর গল্পটা মানবিক।তাই সবার অভিনয় কাজটিকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছে।দাগ সঞ্জয় সমাদ্দার সুন্দর পরিপাটি ভাবে নির্মাণ করে তা অনেক সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন।
এই সমাজে দাগ ছাড়া বেড়ে উঠুক প্রতিটা শিশু।
চাইলে ওয়েবফিল্মটি আপনারাও দেখে নিতে পারেন ওটিটি প্লাটফর্ম চরকিতে...
ধন্যবাদ ❤️