পেইড ফেইসবুক মার্কেটিং | Paid Facebook Marketing Tips

পেইড ফেইসবুক মার্কেটিং | Paid Facebook Marketing Tips | ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং বনাম পেইড ফেসবুক মার্কেটিং




 পেইড ফেইসবুক মার্কেটিং:

অর্থের বিনিময়ে পেইজ বুস্ট করে নিজের টার্গেট অডিয়েন্সের কাছে খুব দ্রুত পণ্যের বিজ্ঞাপন পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে পেইড ফেইসবুক মার্কেটিং করা হয়।


এই মার্কেটিং এ আপনার পোস্টের উপরেই স্পন্সরড লেখা থাকবে। একটা সময় বড় বড় প্রতিষ্ঠান এই পেইড মার্কেটিং চালালেও, আজকাল ছোট-বড় সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এই মার্কেটিং ব্যবহার করে টার্গেট অডিয়েন্সের কাছে নিজেদের পণ্য ও সার্ভিস সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে পারছেন। এর সুবিধা হলো আপনি অঞ্চল, লিঙ্গ বা বয়সভেদে টার্গেট অডিয়েন্সের কাছে নিজের বিজ্ঞাপন পৌঁছাতে পারবেন। যেমন আপনি চান মিরপুরের ২০ বছরের ঊর্ধ্বে সকল নারী যেন আপনার পোস্টটি দেখতে পান। এই কাজটা ফ্রি ফেইসবুক মার্কেটিং দিয়ে করা না গেলেও, পেইড মার্কেটিং দিয়ে খুব সহজেই করতে পারবেন। ফেইসবুক কর্তৃপক্ষকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্দিষ্ট অর্থ প্রদানের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন আকারে পেইজ এবং পোস্ট নির্ধারিত গ্রাহকের কাছে ফেইসবুকে উপস্থাপন করা যায়।


ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং বনাম পেইড ফেসবুক মার্কেটিং

ফেসবুকের অন্যান্য সকল সুযোগ-সুবিধার মধ্যে অন্যতম হলো, এতে কিন্তু আপনি আপনার প্রোডাক্ট ও সার্ভিসেরও মার্কেটিং করতে পারবেন। অর্গানিক মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনার কোনো বাড়তি খরচেরও প্রয়োজন নেই। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও ভালোভাবে ব্যবহার করলে আপনার পোস্টও সামনের সারিতে র‍্যাংক করানো সম্ভব৷ কারণ আপনার পোস্টে যদি সঠিক কিওয়ার্ড ও কাস্টমারদের করা সকল প্রশ্নের উত্তর থাকে, তাহলে আপনি অর্গানিকভাবেই ভালো মার্কেটিং করতে পারবেন।


আমরা আগেই জেনে নিয়েছি যে ফেসবুক মার্কেটিং এর মধ্যে রয়েছে ফ্রি ও পেইড মার্কেটিং। দুটোই ভালো, তবে ছোট ব্যবসার জন্য ফ্রি এবং বড় কোনো অর্গানাইজেশনের মার্কেটিং এর জন্য পেইড সার্ভিসটা ব্যবহার করা উচিত। পেইড ফেসবুক মার্কেটিং পোস্টগুলোর উপরেই ”Sponsored” লেখা থাকে। আর এইটা অহরহই আপনি আপনার নিউজফিডে দেখতে পারবেন। ফ্রি মার্কেটিং এরও ভালো কার্যক্ষমতা রয়েছে, তবে পেইডের মতো বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারে না। তবে অন্যান্য সব জিনিসের মতোই এই দুটো মার্কেটিং এরও বেশকিছু ভালো ও খারাপ দিক রয়েছে। কী সেগুলো? চলুন জেনে আসা যাক!


ফ্রি ফেসবুক মার্কের্টিং


সুবিধা:


ব্র‍্যান্ড সচেতনতা বৃদ্ধি করে।


আপনাত পোস্ট অর্গানিকভাবে যত আকর্ষণীয় হবে, আপনার ফলোয়াররা আপনাকে তত সহজে 

যেসব জায়গায় পেইড মার্কেটিং পৌঁছায় না, সেসব ফ্রি মার্কেটিং পৌঁছে যাবে।


অর্গানিক পোস্টের মাধ্যমে কাস্টমারদের সাথে কথাবার্তা শুরু করতে পারবেন।


অসুবিধা:

  • অর্গানিক পোস্টের মাধ্যমে ইউজার টার্গেট করতে পারবেন না।
  • মনে রাখবেন। আপনার পোস্ট দেখার জন্য ইউজারদের সবসময় আপনাকে ফলো করতে হবে।
  • অনেকসময় শুধু ফলো করলেও আপনার পোস্ট ইউজারদের সামনে নাও আসতে পারে। সেক্ষেত্রে বারবার পেইজের নাম সার্চ দিয়ে দেখতে হবে।
  • নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির মানুষকে টার্গেট করতে পারবেন না।

পেইড ফেসবুক মার্কের্টিং


সুবিধা:

নানান ফরম্যাটের পোস্ট নির্বাচন করতে পারবেন।


ইউজার টার্গেট করে নানা ক্যাটাগরিতে ভাগ করতে পারবেন।


বাজেট অনুসারে আপনার সেল বাড়াতে পারবেন।

রেভিনিউ বৃদ্ধি করতে পারবেন।


অসুবিধা:

  • সবসময় মনমতো রিচ নাও আসতে পারে।
  • উদ্দেশ্য মতো কাজ না করলে টাকা বিফলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
  • অ্যানালাইটিকসের পেছনে প্রচুর সময় দিতে হবে।
  • কনভার্সন রেট কমে যেতে পারে।

পেইড ফেসবুক মার্কেটিং -এর বিভিন্ন কৌশল

1.ইমেইজ অ্যাড:

ইমেইজ অ্যাড সহজবোধ্য এবং আকর্ষণীয় হতে হবে। আপনি যদি ফেসবুক মার্কেটিং সেক্টরে একদমই নতুন হোন, তাহলে ইমেইজ মার্কেটিং দিয়ে শুরু করা আপনার জন্য সহজ হবে। আর মাত্র কয়েক ক্লিকে পোস্ট বুস্ট করলে তো অর্ধেক কাজ হয়েই গেল৷


2.ভিডিও অ্যাড:

ভিডিও অ্যাডের মাধ্যমে আপনি আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের কাজ বা ডেমো দেখাতে পারেন। এই অ্যাড ইউজারদের নিউজফিড এবং স্টোরিতে দেখা যাবে। এটা যে ফিল্ম ফুটেজই হতে হবে, তা কিন্তু না। চাইলে টুকটাক অ্যানিমেশনও ব্যবহার করতে পারেন।


3.পোল অ্যাড:

এই ধরনের ফরম্যাট শুধু ফেসবুকের মোবাইল অ্যাপেই পাওয়া যাবে। এটা একধরনের ইন্ট্যার‍্যাক্টিভ পোস্ট। এখানে দুই বা ততোধিক অপশন নির্বাচন করার মাধ্যমে কাস্টমারদের পছন্দ-অপছন্দ সম্পর্কে জানা যায়। ভোট শেষে কোন অপশন মানুষ বেশি সিলেক্ট করেছেন তাও দেখা যাবে।


4. ক্যারোসেল অ্যাড:

ক্যারোসেল অ্যাডে আপনি সর্বোচ্চ ১০টি ছবি বা ভিডিও ব্যবহার করে নিজের প্রোডাক্ট প্রমোট করতে পারবেন। এই ফরম্যাট ব্যবহারের মাধ্যমে একটি প্রোডাক্টের সুবিধা হাইলাইট করতে পারবেন, অথবা আলাদা আলাদা প্রোডাক্টের কাজ সম্পর্কেও পোস্ট করতে পারবেন। প্রতিটা ছবি বা ভিডিওতে “shop now” এর মতো আলাদা আলাদা লিংকও যুক্ত করা যাবে।



5.স্লাইডশো অ্যাড:

স্লাইডশো এর মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই ছবি, টেক্সট বা ভিডিও ক্লিপসের মাধ্যমে শর্ট ভিডিও তৈরি করতে পারবেন। স্লাইডশো অ্যাড বানাতে আপনাকে অন্যান্য ভিডিওর চেয়ে পাঁচগুণ কম সময় লাগবে। চাইলে আবহসংগীতও ব্যবহার করতে পারেন।


6.কালেকশন অ্যাড:

এই পেইড অ্যাড কেবল মোবাইল ফোনেই দেখা সম্ভব। এটায় আপনার পাঁচটি ভিডিও বা ছবি যুক্ত করে চটজলদি ক্লিক করার মতো অ্যাড তৈরি করে ফেলতে পারেন। এই অ্যাডের মাধ্যমে কাস্টমাররা খুব সহজেই আপনার প্রোডাক্টটা কিনতে পারবেন।



7.লিড অ্যাড:

এটাও শুধু মোবাইল ডিভাইসেই দেখা যায়। এই অ্যাডের মাধ্যমে ঝামেলা ছাড়াই আপনি ইউজারদের কন্টাক্ট ইনফরমেশন পেয়ে যাবেন! এই পরিষেবা মূলত নিউজলেটার সাবস্ক্রিপশন, কোনো ট্রায়ালের জন্য সাইন ইন করা এবং টেস্ট ড্রাইভের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।


8.ডায়নামিক অ্যাড:

ডায়নামিক অ্যাড কাস্টমারদের পছন্দনীয় প্রোডাক্ট তাদের নিউজফিডে শো করবে। মনে করুন আপনি কোনো একটা ওয়েবসাইটে যেয়ে বেশ কিছু জিনিস কেনার জন্য সিলেক্ট করলেন। কিন্তু অর্ডার প্লেস না করেই আপনি ওয়েবসাইট থেকে বের হয়ে আসলেন। তখন ডায়নামিক অ্যাড সেই পণ্যের পোস্টগুলো আপনার নিউজফিডে দেখাতে থাকবে। এতে করে আপনি আবারও ওই পণ্যগুলো কেনার জন্য উদ্বুদ্ধ হবেন। অর্থাৎ এর কাজই হলো পোটেনশিয়াল কাস্টমারদের প্রোডাক্টটি কেনার জন্য উৎসাহিত করা।


9.মেসেঞ্জার অ্যাড:

মেসেঞ্জার অ্যাডের মাধ্যমে আপনি প্রায় ১.৩ বিলিয়ন অ্যাক্টিভ মেসেঞ্জার ইউজারকে রিচ করতে পারবেন। বিজ্ঞাপনের সাথে click-to-Messenger” অপশন যুক্ত করে দিলে সরাসরি আপনার পেইজে মেসেজ চলে যাবে এবং আপনি সেখানেই কাস্টমারের সাথে কথা বলতে পারবেন।


10.স্টোরি অ্যাড:

স্টোরি অ্যাড শুধু মোবাইল ফোনেই ভালোমতো দেখা যাবে কারণ তা ফুলস্ক্রিন জুড়ে থাকবে। আজকাল এই ধরনের অ্যাড খুবই জনপ্রিয়।



কেন শিখবো ফেইসবুক মার্কেটিং:

নতুন গ্রাহক অর্জন থেকে শুরু করে আরো ভালো ব্র্যান্ড সচেতনতা গড়ে তোলা পর্যন্ত ফেসবুক মার্কেটিং আজকাল অনেক ছোট ব্যবসাকে অনলাইনে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে। কেন আপনি ফেইসবুক মার্কেটিং শিখবেন তা সম্পর্কে আরো জানতে চান? চলুন তাহলে, জেনে আসা যাক!

  • আপনার গ্রাহকরা তাদের দিনের একটি উল্লেখযোগ্য সময় ফেসবুকে ব্যয় করেন। 
  • টার্গেটেড অডিয়েন্সকে লক্ষ্য করে বিজ্ঞাপন দেওয়ার ফলপ্রসূ প্ল্যাটফর্ম। 
  • কম খরচে অ্যাড দেওয়া যায়।
  • এটি দ্রুততার সাথে ব্র্যান্ড সচেতনতা বাড়ায় ও বাজেটবান্ধব।
  • ওয়েবসাইটের ট্রাফিক, আয়, বিক্রয় এবং লিড বাড়ায়।
  • ওয়েবসাইটের ভিজিটর ও ট্রাফিক বাড়ায়।
  • গ্রাহকদের ইমেইল তালিকা তৈরি করতে সাহায্য করে।
  • ব্লগ ট্রাফিক বৃদ্ধি করে এসইও র‌্যাঙ্কিং বাড়াতে পারে।
  • অর্গানিক মার্কেটিং -এর চেয়ে বেশী ভালো কাজ করে। 
  • প্রোডাক্টটাকে যত বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানো যাবে, তত বেশি সেল জেনারেট করা যাবে।
  • বিগিনারদের জন্য ফেসবুক মার্কেটিং টিপস: 
  • আজকাল সবাই নিজেদের সার্ভিস প্রচারণার জন্য এই ফেইসবুক মার্কেটিং এর দিকে ঝুঁকছেন। অল্পকিছু বিষয় মাথায় রাখলেই আপনি খুব সহজেই মার্কেটিং হ্যাকগুলো শিখে নিতে পারবেন!

সঠিক সময় নির্বাচন করুন:

আমরা সবাই কিন্তু দিনের ২৪ ঘন্টা ফেইসবুকে কাটাই না। তেমনি আপনার অডিয়েন্সরাও কাটাবেন না। তাই প্রথমেই খুঁজে বের করুন কোন সময় মানুষ বেশিক্ষণ ফেইসবুকে থাকেন। আপনি নিজের বিগত পোস্টগুলো অ্যানালাইসিস করেও যেই সময়টায় মানুষ বেশি অনলাইনে অ্যাক্টিভ থাকেন তা খুঁজে বের করতে পারেন। চাইলে পিক টাইম ও নন-পিক টাইম উভয় সময়েই পোস্ট দিয়ে কেমন সাড়া পান তা যাচাই করে নিতে পারেন।


বিগিনারদের জন্য ফেসবুক মার্কেটিং টিপস: 

আজকাল সবাই নিজেদের সার্ভিস প্রচারণার জন্য এই ফেইসবুক মার্কেটিং এর দিকে ঝুঁকছেন। অল্পকিছু বিষয় মাথায় রাখলেই আপনি খুব সহজেই মার্কেটিং হ্যাকগুলো শিখে নিতে পারবেন!

About the author

Daud
Hey! I'm Daud, Currently Working in IT Company BD. I always like to learn something new and teach others.

Post a Comment

To avoid SPAM, all comments will be moderated before being displayed.
Don't share any personal or sensitive information.