ডিপ্রেশন বা বিষন্নতা রোগের উপসর্গ |
ডিপ্রেশন কি
ডিপ্রেশন হলো ইমোশনাল ইলনেস এবং এ রোগে ব্যক্তির মন-মেজাজ বা মুডের অবনতি ঘটে দারুণভাবে। মানসিক রোগের মধ্যে সর্বাধিক কমন রোগ ডিপ্রেশন। এটি এমন এক রোগ যার সাথে জড়িয়ে থাকতে পারে উদ্বিগ্নতা এবং বাধ্যতাধর্মী গোলযোগ। তবে উদ্বিগ্নতা এবং বাধ্যতাধর্মী গোলযোগ আলাদাভাবেও রোগের মাধ্যমে প্রকাশ পেতে পারে। যারা উদ্বিগ্নতায় সচরাচরভাবে ভুগতে থাকে তাদের মাঝেও ডিপ্রেশন অনেক সময় দেখা দেয়। ডিপ্রেশন দেখা দিতে পারে বিভিন্ন মাত্রায়, গভীরতায় ও পরিসরে। এ রোগটি প্রায়ই দীর্ঘমেয়াদি হয়ে থাকে এবং আক্রান্ত ব্যক্তির জীবন দুর্বিষহ ও অর্থহীন করে ফেলে। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি ভেঙে পড়েন, অলস হয়ে যান, হয়ে যান অকর্মঠ, নিস্তেজ, শক্তিহীন ও অ্যানার্জিহীন
ডিপ্রেশন বা বিষন্নতা:
বিষন্নতা বোধ ও বিষণ্নতা রোগ দুটি আলাদা জিনিস। ছোটখাটো কারণে মন খারাপ হলে আমরা বিষণ্নতা বোধ করি। কিন্তু এটি রোগ নয়, সাময়িক ব্যাপার মাত্র। এটির কোন চিকিৎসা দরকার নেই।
অপরপক্ষে বিষন্নতা রোগটি আরেকটু ব্যাপক। জনসংখ্যার শতকরা 10 থেকে 15 ভাগ বিষণ্ণতা রোগে ভুগে থাকে এবং এর জন্য চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। মহিলাদের মধ্যে এ রোগে ভোগার প্রবণতা পুরুষদের চেয়ে তিন গুণ বেশি। বিষণ্নতা রোগ নানা আকারে আসতে পারে। কিন্তু উপসর্গগুলো মোটামুটি এক।
বিষন্নতা রোগের উপসর্গ:
- দীর্ঘমেয়াদী অশান্তিবোধ
- মন খালি খালি লাগা
- আশাহত অনুভূতি ও নেতিবাচক মনোভাব
- কোন কাজে উৎসাহ না লাগা
- আনন্দদায়ক কাজে আনন্দ না পাওয়া
- নিজেকে অপরাধী ভাবা
- ঘুমের সমস্যা
- খাদ্যে অরুচি
- সেক্স বা যৌনতা সম্পর্কে উৎসাহ কমে যাওয়া ।
- উৎসাহের অভাব বা ক্লান্তিবোধ
- কাজকর্মে অলস হয়ে যাওয়া
- মৃত্যুর চিন্তা ভাবনা
- আত্মহত্যার চিন্তা আসা
- মনোযোগের অভাব
- অস্থিরতা
- বিরক্তি ভাব
- আত্মবিশ্বাসের অভাব
- স্মরণশক্তির সমস্যা
- সিদ্ধান্ত নিতে না পারা
- প্রতিটি জিনিস নেগেটিভ ভাবে দেখা
- শরীরের দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা
- মাথা ব্যথা
- যৌন দুর্বলতা
বিষন্নতা একটি সমগ্র শরীরের রোগ ।এই রোগটি মাথা থেকে পা পর্যন্ত শরীরের যেকোনো ধরনের কার্যক্রমের ব্যাঘাত ঘটায়, শ্লথ করে দেয় । রোগীর অর্থনৈতিক ক্ষতি হয় শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির পাশাপাশি।
Related Posts
বিষন্নতা রোগের চিকিৎসা:
প্রথমেই বিষন্নতাবিরোধী ওষুধ একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় নির্দিষ্ট সময় ধরে খেতে হবে । ওষুধ সেবনের 15 দিন থেকে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাত দিন থেকেই রোগের উন্নতি লক্ষ্য করা যায়।সামগ্রিক উন্নতি লাভের রোগীকে কমপক্ষে দুই থেকে তিন মাস একটানা ওষুধ খেতে হয় ।
এ রোগের চিকিৎসায় ওষুধের কোন কোর্স নেই । চিকিৎসক রোগীর উন্নতি পর্যবেক্ষণ করে ওষুধের ধীরে ধীরে কমাবেন এবং পরে তা বন্ধ করবেন । তবে , মোটামুটি ভাবে বলা যায় রোগীকে 6 মাস থেকে 9 মাস কোন কোন ক্ষেত্রে এক বছর ওষুধ সেবন করতে হতে পারে।
ডিপ্রেশনের জন্য ওষুধের পাশাপাশি নানা ধরনের থেরাপি প্রয়োগ করা হয় এর মধ্যে কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি বা সি বি টি /CBT উল্লেখযোগ্য।
Source:
ডা: মোঃ ফাইজুল হক