কিডনি ভালো রাখার উপায়

কিডনি ভালো রাখার উপায়

আসসালামু আলাইকুম দাউদ বিডি ব্লগে আপনাকে স্বাগতম। আজকের আলোচনা কিডনি ভালো রাখার উপায়

Kidney

কিডনি রোগ কি?

কিডনি, যা বাংলায় বৃক্ক নামে পরিচিত, মানবদেহের একটি অত্যন্ত জরুরি অঙ্গ। মানব দেহের কিডনির অবস্থান কোমরের দু’পাশে এবং তারা রক্তে থাকা বিভিন্ন দূষিত পদার্থ, বর্জ্য, এবং অতিরিক্ত জল পরিশোধন করে। এগুলি মূত্রের মাধ্যমে দেহ থেকে বের করে দেয় এবং এভাবে রক্তের পরিষ্কারণে এবং ইলেক্ট্রোলাইট ব্যালেন্স রক্ষায় সাহায্য করে।কোন কারণে যদি কিডনি সঠিকভাবে এই কাজগুলি করতে ব্যর্থ হয় তাহলে এটিকে কিডনির রোগ হিসেবে ধরা হয়। এর ফলে দেহে বর্জ্য পদার্থ ও দূষিত জল জমা হতে থাকে, যা বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় পরিণত হয়। কিডনি রোগ অনেক সময় কোনো প্রাথমিক উপসর্গ ছাড়াই ধীরে ধীরে অগ্রসর হয় এবং তার প্রকোপ বাড়ার সাথে সাথে মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে।

কিডনি ভালো রাখার উপায়

কিডনি স্বাস্থ্য রক্ষা করার উপায়ের মধ্যে অন্যতম সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা ও প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া। নিম্নে কিছু প্রাথমিক উপায় উল্লেখ করা হলো:

পর্যাপ্ত পানি পান: প্রতিদিন যত সম্ভব প্রায় ৮-১০ গ্লাস পানি খাবেন। পানি কিডনির সঠিক ফাংশনিং এবং পদার্থ অপসারণে সাহায্য করে।

স্বাস্থ্যকর খাবার ও পরিমাণ: স্বাস্থ্যকর খাবার খাবার ব্যবস্থা করুন, যেমন সবজি, ফল, প্রোটিন ও ফাইবারের ধারণ করা জরুরি। অতিরিক্ত লবণ, চিনি, ওয়াস্তুকৃত খাবার ও অতিরিক্ত প্রোটিনের সাপেক্ষে সতর্ক থাকুন।

রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখা :উচ্চ রক্তচাপ হলো কিডনি রোগের প্রধান দ্বিতীয় কারণ এবং এটি ডায়াবেটিসের মতোই নীরব ঘাতক হিসেবে কাজ করে। এটি নিশ্চুপে কিডনির ক্ষতি সাধন করতে থাকে। তাই, রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখা কিডনি জটিলতা প্রতিরোধের একটি মূল উপায়। যদি রক্তচাপ ১৪০/৯০ বা তার বেশি হয়, তাহলে কিডনির সমস্যা বাড়ার ঝুঁকি থাকে।কিডনি সুস্থ রাখার জন্য রক্তচাপের মাত্রা হলো ১৩০/৮০ অথবা তার নিচে। এর জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং লবণ কম খাওয়া জরুরি। এই উপায়গুলো অনুসরণ করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে কিডনির সুস্বাস্থ্য বজায় রাখা সম্ভব।

নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম: নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম কিডনির সুস্থতা বজায় রাখে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা :সাধারণত আমাদের দেশে বেশির ভাগ কিডনি রোগীরা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। অনিয়ন্ত্রিত এবং দীর্ঘদিনের ডায়াবেটিস কিডনির বিভিন্ন রোগ ও বিকলের অন্যতম কারণ। ডায়াবেটিকসে রোগীদের ডায়াবেটিস শনাক্ত হওয়ার সময় থেকেই সচেতন হতে হবে রক্তে শর্করা পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারলে কিডনির বিভিন্ন জটিলতা এড়ানো সম্ভব।

আমরা যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের মনে রাখা উচিত কিডনি অনেকটা বিকল হয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তেমন কোনো উপসর্গ প্রকাশ পায় না এবং যখন উপসর্গ গুলো প্রকাশ পায় তখন অনেকটা দেরি হয়ে যায়। তাই নিয়মিত রক্তের সুগারের পরিমাণ পরীক্ষা করা এবং প্রতি ৬মাস পরপর সেরাম ক্রিয়েটিনিন ও প্রস্রাবের আমিষ আমিষের পরিমাণ পরীক্ষা করতে হবে।

ধূমপান এবং অতিরিক্ত অ্যালকোহল পরিহার: ধূমপান এবং অতিরিক্ত অ্যালকোহল না নেওয়া উচিত কারণ এগুলো কিডনি সমস্যা বা বিকারের জন্য প্রধান উপাদান হতে পারে।

ঔষধের সঠিক ব্যবহার: নিয়মিত ঔষধ নিন, কিন্তু অতিরিক্ত অথবা অবৈধ ঔষধ না গ্রহণ করা উচিত। ডাক্তারের নির্দেশানুযায়ী ঔষধ গ্রহণ করুন।

নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা করা :যেসব ব্যক্তিদের পরিবারে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, এবং অতিরিক্ত ওজনের ইতিহাস রয়েছে, তাদের কিডনির রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অন্যান্যদের তুলনায় অধিক থাকে। এই ঝুঁকি থাকা ব্যক্তিদের জন্য নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা অত্যন্ত জরুরি। কারণ, যদি কিডনি সমস্যা অনাদৃত থাকে, তবে এটি শরীরের অন্যান্য মৌলিক অঙ্গগুলির কার্যকারিতা ব্যাহত করে এবং গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। তাই, যাদের কিডনি রোগের ঝুঁকি রয়েছে, তাদের উচিত নিয়মিত কিডনি চেক-আপ করানো।

নিয়মিত চেকআপ: নিয়মিত চেকআপ এবং পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ সমস্যাগুলি প্রারম্ভিক অবস্থায় ধরা পড়তে পারে, যা কিডনি স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

এই সমস্ত উপায়গুলি মিলিত করে আপনি আপনার কিডনির স্বাস্থ্য রক্ষা করতে সক্ষম হবেন। তবে, যদি কোনও সমস্যা অনুভব করেন, তাহলে তা নিকটস্থ চিকিৎসকের সাথে আলাপ করতে অবিলম্বে যাবেন।

About the author

Daud
Hey! I'm Daud, Currently Working in IT Company BD. I always like to learn something new and teach others.

Post a Comment

To avoid SPAM, all comments will be moderated before being displayed.
Don't share any personal or sensitive information.