মৃত্যু জেনেও পুরুষ মৌমাছি কেন স্ত্রী মৌমাছির সাথে মিলন করে?

মৃত্যু জেনেও পুরুষ মৌমাছি কেন স্ত্রী মৌমাছির সাথে মিলন করে?মৌমাছিরা কীভাবে মধু জমা করে?

 মৌমাছিরা কীভাবে মধু জমা করে?

মধু মৌমাছির তৈরী এক প্রকার উপাদেয় খাদ্য। প্রতিটি মৌচাকে একাটি রানী মৌমাছি এবং অনেক শ্রমিক মৌমাছি থাকে। শ্রমিক মৌমাছিরা ফুলের মিষ্টি রস শুষে নেয় এবং তা জমা করে পাকস্থলীর উপরে এক বিশেষ অঙ্গে যাকে মধুথলি বলে। ফুলের মিষ্টি রস মধুথলিতে জমা করার সময় এর সঙ্গে লালা গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত বিভিন্ন উৎসেচক মেশায়। এর ফলে মিষ্টি রস পরিবর্তিত হয়ে আংশিক মধু তৈরী হয়, যা চাকে এনে ঢেলে দেয় মধু রাখার খোপগুলোতে। তরুণ শ্রমিক মৌমাছিরা এ সময় ছুটে এসে ঐ মধু আবার মুখে ভরে এবং তাদের লালার সংগে মিশিয়ে তৈরী করে আসল মধু এবং তা জমা করে খোপে। শ্রমিক মৌমাছিরা জোরে ডানা নেড়ে খোপে রক্ষিত মধু থেকে বাড়তি পানি সরিয়ে দেয়। ফলে এক সময় ফুলের মিষ্টি রস হয়ে যায় ঘন মধু, যা জমা রাখে নিজেদের ও বাচ্চাদের খাবার হিসাবে। মধু জমা রাখার পর খোপগুলোর মুখ মোম দিয়ে বন্ধ করে দেয়।

Male-Bees

নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও পুরুষ মৌমাছি কেন স্ত্রী মৌমাছির সাথে মিলন করে?

এরা মৃত্যুর জন্য মোটেও ভয় পায় না।একজন মানুষকে মারতে হলে প্রায় ১১০০ হুলের বিষ প্রয়োজন। আনুমানিক ১ কেজি মধু সংগ্রহের জন্য ১১০০ মৌমাছি প্রায় ৯০ হাজার মাইল পথ ঘুরতে হয়। যা কিনা চাদের কক্ষপথের প্রায় তিনগুণ!ফুলের হিসাব করলে দেখা যায় ১ কেজি মধু সংগ্রহের জন্য প্রায় ৪০ লক্ষ ফুলের পরাগরেণু স্পর্শ করতে হয়। সবকিছু ঠিক থাকলে ভালো মৌসুমে প্রায় ৫৫ কেজি মধু জমা হয়। এসব তথ্য থেকে আমরা বুঝতে পারি কর্মী মৌমাছি কি পরিমাণ পরিশ্রমী।

অপরদিকে রাণী মৌমাছি শুধু খায় আর ডিম পারে!প্রতিদিন ১৫০০ থেকে ২৫০০ ডিম দেয়। পুরুষ মৌমাছির স্বভা বেশ অদ্ভুত। এরা জীবনেও কোন কাজ করে না, এমনকি কর্মী মৌমাছিকে এদের খাবার পর্যন্ত মুখে তুলে দিতে হয়। এদের জীবনের একমাত্র লক্ষ হলো রাণী মৌমাছির সাথে মিলিত হওয়া!মিলন মৌসুমে প্রতিদিন দুপুরবেলা চাকের সর্বাধিক সক্ষম পুরুষ মৌমাছিগুলো একটি নির্দিষ্ট স্থানে ভিড় জমায় যাকে বলা হয় পুরুষ ধর্মসভা!ঠিক একই সময়ে চাক থেকে রাণী মৌমাছি ঘুরতে বের হয়, যাকে বলা হয় “দি মিটিং ফ্লাইট”

রাণী মৌমাছি হঠাৎ করে ঢুকে পড়ে পুরুষ ধর্মসভা এলাকায়। সে এসেই এক বিশেষ ধরণের গন্ধ ছড়িয়ে দেয়, যার ফলে শত শত পুরুষ মৌমাছি উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এর পরপরই রাণী মৌমাছি উড়ন্ত অবস্থায় পছন্দমত পুরুষের সাথে মিলন করে। রাণী মৌমাছি একেবারে পর্যায়ক্রমে ১৮-২০টা পুরুষ মৌমাছির সাথে মিলিত হতে পারে!

অদ্ভুত ব্যাপার হল, যৌন মিলনের সময় পুরুষ মৌমাছির এন্ডোফেরাস বা যৌনাঙ্গ ভেঙ্গে যায় এবং তখনই মারা যায় পুরুষ মৌমাছি। এজন্যই এই মিলনকে বলা হয় “দি ড্রামাটিক সেক্সুয়াল সুইসাইড”।

একটি মৌচাক একটি মাত্র রাণী আ স্ত্রী মৌমাছি থাকে। রাণীকে কেন্দ্র করেই মৌচাক গড়ে ওঠে।

যদি কোন ডিম থেকে স্ত্রী মৌমাছির জন্ম হয় সে শিশু স্ত্রী মৌমাছিকে কর্মী মৌমাছিরা লুকিয়ে রাখে যেন রাণীর নজরে না আসে। রাণীর নজরে পড়লে ঐ শিশু স্ত্রী মৌমাছির নিশ্চিত মৃত্যু । শিশু রাণী মৌমাছিটি বড় হলে দুই রাণীর মধ্যে যুদ্ধ হয়। এতে দুটি পথ খোলা থাকে । হয় যুদ্ধে মৃত্যু ( একজন অপর জনকে হত্যা করে মৌচাকের কর্তৃত্ব গ্রহণ করে) না হয় দুজন আলাদা হয়ে পৃথক দুটি মৌচাক গড়ে তোলা।অনাকাঙ্খিতভাবে যদি কোন রাণী মৌমাছি মারা যায় তবে সে খবর ১৫ মিনিটের মধ্যে সকল কর্মী মৌমাছি জানতে পারে এবং সম্মিলিতভাবে নতুন রাণী মৌমাছি তৈরি করার উদ্যোগ নেয়।আরো কিছু অদ্ভুত বিষয় রয়েছে, যা জানলে আপনারা অবশ্যই অবাক হবেন,,, ৫০০ গ্রাম মধু তৈরিতে ২০ লক্ষ ফুল লাগে। শ্রমিক বা কর্মী মৌমাছি সারা জীবনে আধা চা চামচ মধু তৈরি করতে পারে। আরো একটা মজার ব্যাপার হলো, পৃথিবীতে মধু একমাত্র খাদ্য যা কখনোই পঁচে না!!!

মধু-সংগ্রহকারী মৌয়ালরা পুরো মৌচাক কেটে নিলেও তাদেরকে মৌমাছি কামড়ায় না কেন?

মৌচাকে সামান্য ঢিল ছুঁড়ে দিলেই, 'মৌমাছি' কামড়াতে আসে.. কিন্তু মধু-সংগ্রহকারী মৌয়ালরা পুরো মৌচাক কেটে নিলেও তাদেরকে মৌমাছি কামড়ায় না কেন? তারা কি জাদু /মন্ত্রে মৌমাছিদের বস করে?

ম্যাজিক বলতে কিছুই না। মৌয়ালদের যে একেবারেই মৌমাছি কামড়ায় না এমনটা না। দুই একটা কামড় দেয়। কিন্তু গাছে ওঠার আগেই ধোয়া দেওয়া হয়। এবং সঙ্গে করে আগুন ও ধোয়া নিয়ে গাছে ওঠে যার কারনে মৌচাকে ধোয়া দিলে মৌমাছি ধোয়া ও আগুন থেকে দূরে চলে যায়।তখন মৌয়াল মধু সংগ্রহ করে (এ সময় দু একটা কামড় দেয়)

Toofan Bengali Movie Songs Lyrics Mp3 Download :

মৌচাকের মধু কতদিন পর্যন্ত রাখা যায়?

সাধারণ ভাবে বলতে গেলে, মধু খারাপ হওয়ার কোন ধরনের সঠিক তথ্য নিশ্চিত করা যায় না।কারণ টেকনিক্যালি বা মেডিক্যালি ভাবে বলা যায় যে, মধুর মেয়াদ শেষ হতে পারে না, কারণ মধু নিজে থেকে নষ্ট হয় না। মধুর ঘনত্ত্ব পরিবর্তন হতে পারে এবং হবে। এটি ফ্যাকাশে থেকে গাঢ় রঙ পরিবর্তন পারে। এটি পরিষ্কার হতে পারে এবং কালো হতে পারে এবং স্ফটিককরণ নামক প্রক্রিয়ায় এর টেক্সচার মসৃণ এবং পাতলা থেকে ঘন এবং দানাদার হতে পারে। সৌভাগ্যক্রমে, যদিও, এই পরিবর্তনগুলির কোনটিই মধুকে খারাপ বা খাওয়ার জন্য অনিরাপদ মনে করা হয় না। তবুও এই নিয়মের একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যতিক্রম আছে। যদি মধু কখনও আর্দ্রতার সংস্পর্শে আসে, তবে এটিতে গাঁজন এবং ফেনিল দেখা যায় যা অবিলম্বে প্রকাশ ঘটে এবং সেই মধু দুর্গন্ধযুক্ত, টক, ছাঁচযুক্ত এবং একেবারে অরুচিকর হয়ে যাবে । যা খাওয়ার জন্য উপযোগী হবে না। তবে দেখা যায় কম প্রক্রিয়াজাত মধু, যেমন কাঁচা এবং মৌচাক মধু, স্ফটিক করার জন্য উপযুক্ত হয়। অনেক দোকান পাস্তুরিত মধু বিক্রি করে, যা মধুকে তাপ দিয়ে তৈরী করা হয়। এই দূষণ মূক্ত (তাপ দেওয়া) মধু দীর্ঘ সময়ের জন্য রাখা যায় এবং পরিষ্কার থাকে, তবে কম প্রক্রিয়াজাত মধুতে পাওয়া কিছু প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শারীরিক ভাবে উপকারী।তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো,(যা গুরুজন থেকে জেনেছি ) যদি সঠিকভাবে রাখা যায় তবেই মধু যত পুরোতন হবে ততই শরীরের জন্য বেশি উপকারী হবে।। ধন্যবাদ।

About the author

Daud
Hey! I'm Daud, Currently Working in IT Company BD. I always like to learn something new and teach others.

Post a Comment

To avoid SPAM, all comments will be moderated before being displayed.
Don't share any personal or sensitive information.