Name :Rong Dhong
Cast: Tariq Anam Khan, Arman Pavez Murad, Lutfor Rahman George, Shera Zaman, Shadhin Khasru, Faruque Ahmed, Sabnam Parvin, Ejajul Islam, Makhnnun Sultana Mahima, Jamil Hossain, Pran Roy, Arnab Khan, Amin Azad, Shamim Hossain, Rakib Hossain Evon, Sumon Sheikh, Farzana Mukto, Shohel Mondol,Sadia Ema, Myesha Sharna, Fh Shaan..Many others..
Director: Ahasan Sarawar.
Cinematographer: Saidul islam.
Chief Assistant Director: Nadim mahmud, Rony Ahshan, Ahsan Nazmus Sakib.
Music Director: Foad Nasser Babu, Pantha Kanai, Mahmudul Hasan Romance, Shamim Alam Bulet, Tasnuv.
Singer: Pantha Kanai, Kishor, Shumit, Jamil Hossain, Ady.
Lyric: Atiur Rahman, Faisal Rabbikin, D-man Rahman, Jamil hossain, Shumit.
Background Music : Mahmudul Hasan Romance.
Editor: Ahasan Sarawar.
Script: Ahasan Sarawar.
Dialogue: Ahasan Sarawar, Rony Ahshan, Ahsan Nazmus Sakib.
Banner: Blackshine Ltd, Minute Films.
Release Date: 8 November 2024.
(হালকা স্পয়লার)
অল্প কথায় গত শুক্রবার রিলিজ পাওয়া আহসান সারোয়ার পরিচালিত "রং ঢং" সিনেমাটি আমাদের ঝা-চকচকে মিডিয়া জগতের আড়ালে ঘটা নানা অন্ধকার গল্পের একটি সাহসী প্রয়াস। তারকা খ্যাতির মোহে নায়ক-নায়িকা থেকে গায়ক-গায়িকা হবার বাসনা নিয়ে এই ইন্ডাস্ট্রিতে প্রতিদিনই আগমন ঘটে বহু তরুন-তরুনীর। দুই একজন লাইমলাইটে আসলেও অনেকেই প্রতারণা এবং অপরাধের বেড়াজালে আটকে যান, যেখান থেকে ফিরে আসাটা অসম্ভব হয়ে পড়ে।এমনই গল্পে বিভিন্ন পেশার, বিভিন্ন মানুষের গল্প উঠে এসেছে 'রং ঢং' সিনেমায়।
প্রচারণার কল্যানে জেনেছি, সিনেমাটির শ্যুটিং সম্পন্ন হয় নয় বছর আগে। আজ থেকে নয় বছর আগে চিত্রায়িত এই সিনেমায় এমন সাহসী সাবজেক্ট বাছাই করার জন্য ধন্যবাদ জানাতেই হয় সিনেমার পরিচালক আহসান সারোয়ারকে। সাহসী গল্পের কারনেই কিনা জানিনা তবে, সেন্সর বোর্ড আটকে দেয় সিনেমাটিকে, এমনকি এই সিনেমাকে ব্যান ও করা হয়েছিলো। তবে সব বাধা পেরিয়ে মুক্তির আলো দেখেছে 'রং ঢং' এটা স্বাভাবিকভাবেই নির্মাতা এবং পুরো টিমের জন্য অন্যরকম একটা ভালোলাগার বিষয় নিঃসন্দেহে। নির্মাতার নেক্সট সিনেমা দেখার অপেক্ষা রইলো।
মিডিয়া এবং চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির ভিতরে ঘটে থাকা নানা বাস্তবতা, যা আমরা সাধারণ মানুষের জানা সম্ভব না সেসবের মাঝের কিছু বিষয় স্ক্রিনে উঠিয়ে আনা হয়েছে বেশ বিশ্বাসযোগ্য ভাবেই। গল্প, চিত্রনাট্য এবং সংলাপ সময়ের হিসাবে বেশ ভালো। তবে মেকিংয়ের পাশাপাশি 'রং ঢং' সিনেমার সিনেমাটোগ্রাফি সম্পর্কে না বললেই নয়, নয় বছর আগের ফিল্ম হিসেবে বেশকিছু অসাধারণ সুন্দর ক্যামেরার কাজ আমরা দেখেছি এই সিনেমায়। ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর এবং গানও বেশ ভালো লেগেছে।
সিনেমার গল্পের মূল কাহিনিতে বেশকিছু চরিত্র প্রাধান্য পেয়েছে। যেমন সাগর চরিত্রে গ্রামের একজন সাধারণ ছেলে, যে কিনা সালমান শাহের ফ্যান। যার ধ্যান-জ্ঞান সবই সিনেমার নায়ক হওয়া। নিজের ভিটামাটি বন্ধক রেখে ঢাকায় এসে অসাধু পরিচালকের পাল্লায় পড়ে সবটা খুইয়ে দিশেহারা। আবার একই ধরনের গল্প দেখি একজন গায়কের। যিনি বন্ধুদের থেকে ধার করে, জমি বিক্রি করে টাকা যোগায় করে একটা ভালো চান্সের জন্য, কিন্তু একই রকমের প্রতারণার শিকার হন তিনিও। একজন বাবাকে দেখতে পাই, যিনি তার একমাত্র মেয়েকে হারান নাটকের অভিনয়ের কথা বলা একটি চক্রের কারসাজির কারনে। আবার এই সিনেমায় একজন প্রযোজকের দেখা পাই যিনি কিনা, সিনেমা বানাতে যেয়ে সিনেমার সাথে সংশ্লিষ্ট অসাধু মানুষের কারনে মূল বাজেটের চেয়ে অনেকগুন বেশি বাজেটের ধাক্কায় বাজে পরিস্থিতিতে পড়েন। এমনকি ঘটনার ধারাবাহিকতায় নিজের আপনজন হারান। একটা সময় এই সব হারানো মানুষগুলো একত্রিত হয়ে তাদের সাথে হওয়া অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে চান। কিন্তু সেটা কি এতো সহজ ভাবে করা যায়!!? উত্তর মিলবে সিনেমার পর্দায়!!
সিনেমা, টেলিভিশন বা মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রির যাত্রাপথ কি আসলেই শুধুমাত্র শিল্প-সংস্কৃতির সোজা রাস্তায় চলে, নাকি এখানেও অন্ধকার দিকটাই একটা সময় ক্ষমতাশালীদের রোজগারের প্রধান পথ হিসেবে জায়গা করে নেয় - সেসব বিষয় নতুন করে ভাবতে শেখায় আহসান সারোয়ারের 'রং ঢং'। আমাদের ইন্ডাস্ট্রির ভেতরের গল্প নিয়ে এতো ডিটেইলসে এর আগে কাজ হয়েছে বলে মনে পড়েনা।
'রং ঢং' এর অন্যতম আলোচিত দিক এর মাল্টি কাস্টিং। তারিখ আনাম খান, লুতফর রহমান জর্জ, ফারুক আহমেদ, সোহেল মন্ডল, স্বাধীন খসরু, ডা. এজাজ, জামিল হোসেন, অর্ণব খান, সেরা জামান, মাহিমা, শবনম পারভীন, প্রাণ রায় সহ একঝাঁক গুণী এবং শক্তিশালী অভিনয় শিল্পীদের দেখা মিলেছে এই সিনেমায়। প্রত্যেকেই যার যার চরিত্রে ভালো অভিনয় করেছেন। পজিটিভ এবং নেগেটিভ দুই ধরনের মানুষের দেখা মিলেছে, এবং প্রত্যকেই নিজেদের চরিত্রের সাথে জাস্টিস করেছেন।
নিঃসন্দেহে এই সিনেমার অন্যতম শক্তিশালী দিক এর সংগীত। "আমার বয়স ১৬ থেকে প্রেম খেলা", "যারে আমার ভালো লাগে", "বিকেলে বৃষ্টিতে" এর মতো সুন্দর গানগুলো গল্পে এমনভাবে রাখা হয়েছে যা গল্প এগিয়ে নেবার পাশাপাশি ইমোশনালী দর্শকদের গল্পের সাথে যুক্ত করতে সাহায্য করেছে। তবে সিনেমাটি ওই সময়ে যদি রিলিজন্দেয়া যেতো স্বাভাবিকভাবেই তাহলে এর সাথে দর্শকদের এনগেজড হতে সুবিধা হতো আরো বেশি।
নির্মাতা আহসান সারোয়ার এই সিনেমার মাধ্যমে কক্সবাজার, সিলেট, বান্দরবন সহ বেশকিছু দর্শনীয় স্থান তুলে ধরেছেন যা সিনেমাটিকে স্ক্রিনে ভিন্নতা এনে দিয়েছে। হ্যা কোনো কমতি নাই, বা ভালো কিছু করা যেতো না তেমনটা নয়। অবশ্যই সিনেমায় বেশকিছু কমতি বা ঘাটতি রয়েছে। তবে এটাও মাথায় রাখতে হবে যে, এটি নয় বছর আগের সিনেমা এবং অসংখ্যবার সেন্সরের কাঁচির মধ্য দিয়ে আসতে হয়েছে এই সিনেমাকে। তাই স্বাভাবিকভাবেই এডিটিং নিয়ে কয়েক জায়গায় হোচট খেতে হয়েছে আমাদের।
তবে সব মিলিয়ে সুস্থধারার বক্তব্যধর্মী একটি সিনেমা হিসেবে 'রংঢং' আমাদের দেখার এবং জানার নানা দিক উন্মোচন করে বেশ ভালোভাবেই। দেখে নিতে পারেন বাস্তবতার উপর ভিত্তি করে বক্তব্যধর্মী গল্প সমৃদ্ধ এই সিনেমাটি।