আপনি কি নতুন ভোটার হতে চান? অথবা জাতীয় পরিচয়পত্র (NID Card) করার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান? বাংলাদেশে নতুন ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়া ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সম্পর্কে এই গাইডে সবকিছু ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
২০২৪ সালে, শুধুমাত্র ১৬ বছর বয়স হলেই অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন করা সম্ভব। ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই আপনি NID Card পেয়ে যাবেন। ভোটার তালিকায় নাম যুক্ত হবে বয়স ১৮ বছর হলে, তখনই আপনি ভোট দিতে পারবেন।
নতুন ভোটার হতে যা যা লাগে
নতুন ভোটার নিবন্ধনের জন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট প্রয়োজন। এর মধ্যে কিছু বাধ্যতামূলক এবং কিছু ঐচ্ছিক।
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
১. অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ
২. শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ (JSC/SSC/HSC বা সমমান)
৩. নাগরিকত্ব সনদ (চেয়ারম্যান বা মেয়রের কাছ থেকে)
৪. প্রত্যয়ন পত্র (স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি থেকে)
৫. পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি
৬. ইউটিলিটি বিল (বিদ্যুৎ/গ্যাস বিলের কপি)
৭. ট্যাক্স বা খাজনা পরিশোধের রশিদ
৮. রক্তের গ্রুপ টেস্টের রিপোর্ট
ডকুমেন্টস সম্পর্কে বিস্তারিত
১. অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ
- এটি বাধ্যতামূলক।
- হস্তলিখিত জন্ম নিবন্ধন সনদ গ্রহণযোগ্য নয়।
- যদি আপনার না থাকে, অনলাইনে আবেদন করে দ্রুত সংগ্রহ করুন।
২. শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ
- JSC, SSC, HSC, বা সমমানের সনদ জমা দিতে হবে।
- মাদ্রাসা বা ভোকেশনাল শিক্ষার ক্ষেত্রেও সমমানের সনদ প্রযোজ্য।
৩. নাগরিকত্ব সনদ
- এটি স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি (চেয়ারম্যান/মেয়র/কাউন্সিলর) থেকে সংগ্রহ করতে হবে।
- আপনার নাগরিকত্ব প্রমাণে এটি বাধ্যতামূলক।
৪. প্রত্যয়ন পত্র
- এটি নাগরিকত্ব সনদের মতোই প্রয়োজনীয়।
- স্থানীয় চেয়ারম্যান বা কাউন্সিলরের কার্যালয় থেকে সংগ্রহ করতে হবে।
৫. পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি
- আবেদনকারীর পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাইয়ের জন্য জমা দিতে হবে।
৬. ইউটিলিটি বিলের কপি
- বর্তমান ঠিকানার প্রমাণ হিসেবে বিদ্যুৎ বা গ্যাস বিলের কপি জমা দিতে হবে।
৭. ট্যাক্স বা খাজনা পরিশোধের রশিদ
- বাড়ি বা জমির কর পরিশোধের রশিদ আবেদনের সময় জমা দিতে হবে।
৮. রক্তের গ্রুপ টেস্টের রিপোর্ট
- এটি অপশনাল হলেও জমা দিলে NID Card-এ রক্তের গ্রুপ উল্লেখ থাকবে।
নতুন ভোটার আবেদন করার শর্ত
নতুন ভোটার নিবন্ধনের জন্য আপনাকে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে:
- আবেদনকারী অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
- বয়স ১৬ বছর বা তার বেশি হতে হবে।
- পূর্বে কখনো জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য নিবন্ধন করেননি।
আবেদন প্রক্রিয়া
ধাপে ধাপে অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া
১. নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।
২. “নতুন ভোটার নিবন্ধন” ফর্ম পূরণ করুন।
৩. প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড করুন।
৪. জমা দেওয়ার পর একটি প্রিন্ট কপি সংগ্রহ করুন।
৫. নির্বাচন অফিসে জমা দিয়ে বায়োমেট্রিক তথ্য দিন।
বিবাহিতদের জন্য অতিরিক্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
যদি আবেদনকারী বিবাহিত হন, তবে:
- কাবিননামা বা বৈবাহিক সনদ।
- স্বামী বা স্ত্রীর NID Card-এর ফটোকপি।
অঙ্গীকারনামা জমা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা
যদি আপনি দীর্ঘদিন ধরে NID Card করেননি বা বিদেশে অবস্থান করছিলেন, তবে:
- একটি অঙ্গীকারনামা জমা দিতে হবে।
- অঙ্গীকারনামায় উল্লেখ থাকবে আপনি আগে কখনো জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন করেননি।
আইডি কার্ড করতে কি কি লাগে?
নতুন NID Card পেতে:
- অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ।
- নাগরিক সনদ।
- পিতা-মাতার NID Card।
- বিদ্যুৎ বা গ্যাস বিলের কপি।
- রক্তের গ্রুপ টেস্টের রিপোর্ট।
১৮ বছর হওয়ার পূর্বে NID Card করা যাবে?
হ্যাঁ, বর্তমানে ১৬ বছর বয়স থেকেই NID Card-এর জন্য আবেদন করা যায়।
- তবে, ভোটার তালিকায় নাম আসবে যখন আপনার বয়স ১৮ হবে।
- এর আগে NID Card ব্যবহার করে সরকারি-বেসরকারি সেবা গ্রহণ করা যাবে।
স্কুল সার্টিফিকেট ছাড়া ভোটার হওয়া যায়?
- JSC বা তার সমমান সার্টিফিকেট থাকলে জমা দিতে হবে।
- তবে, যারা পড়াশোনা করেননি, তাদের জন্য স্কুল সার্টিফিকেট প্রয়োজন নয়।
উপসংহার
নতুন ভোটার হওয়া এবং NID Card তৈরি করা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ। এটি শুধু ভোটাধিকারের নিশ্চয়তা দেয় না, বরং নাগরিকত্বের প্রমাণ এবং বিভিন্ন সরকারি সেবা গ্রহণে সহায়ক হয়। সঠিক ডকুমেন্ট ও নিয়ম মেনে আবেদন করলে সহজেই আপনি আপনার NID Card পেতে পারেন।