ভূমিকম্প, বাংলাদেশ, ঢাকা, ১১ এপ্রিল ২০২৫, ভূমিকম্পের প্রস্তুতি, ভূমিকম্পের প্রভাব
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত
আজ শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫, বিকেল ৪টা ৫২ মিনিটে রাজধানী ঢাকা, সিলেট, কুমিল্লা ও আশপাশের এলাকায় একটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (USGS) জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪.৩। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জের কাছে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকায়।
ভূমিকম্পের উৎস ও মাত্রা
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণাকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রুবাঈয়্যাৎ কবীর জানান, এই ভূমিকম্পটি স্বল্পমাত্রা থেকে মাঝারি মাত্রার ছিল। উৎপত্তিস্থল ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জের কাছে বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্ত এলাকায়।
সম্প্রতিকালের ভূমিকম্পের প্রেক্ষাপট
এর আগে, ২৮ মার্চ ২০২৫ তারিখে মিয়ানমারে পরপর দুটি ভূমিকম্প হয়েছিল। প্রথমটির মাত্রা ছিল ৭.৭ এবং দ্বিতীয়টির মাত্রা ছিল ৬.৪। এই ভূমিকম্পগুলোর প্রভাব বাংলাদেশেও অনুভূত হয়েছিল। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের ভূমিকম্পের পুনরাবৃত্তি ভবিষ্যতে আরও বড় ভূমিকম্পের পূর্বাভাস হতে পারে।
বাংলাদেশের ভূমিকম্প ঝুঁকি
বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিকভাবে ভূমিকম্প-প্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত। দেশটি তিনটি প্রধান টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে রয়েছে: ইউরেশিয়ান প্লেট, ইন্ডিয়ান প্লেট ও বার্মা মাইক্রোপ্লেট। এই প্লেটগুলোর সংঘর্ষ ও সঞ্চিত ভূতাত্ত্বিক চাপের কারণে বাংলাদেশে মাঝারি থেকে বড় মাত্রার ভূমিকম্পের সম্ভাবনা রয়েছে।
ভবিষ্যৎ প্রস্তুতি ও করণীয়
- ভবন নির্মাণে সতর্কতা: বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড ২০২০ অনুযায়ী ভূমিকম্প প্রতিরোধী ভবন নির্মাণ বাধ্যতামূলক করা উচিত।
- জনসচেতনতা বৃদ্ধি: ভূমিকম্পের সময় করণীয় সম্পর্কে নিয়মিত মহড়া ও প্রচারণা চালানো জরুরি।
- জরুরি সেবা প্রস্তুতি: ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভূমিকম্প পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত রাখা প্রয়োজন।
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অফিসে মহড়া: স্কুল, কলেজ, অফিসে ভূমিকম্প মহড়া বাধ্যতামূলক করা উচিত।
উপসংহার
আজকের ভূমিকম্পটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, বাংলাদেশ একটি ভূমিকম্প-প্রবণ দেশ এবং আমাদের প্রস্তুতি গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। ভবিষ্যতে বড় ধরনের ভূমিকম্পের সম্ভাবনা রয়েছে, যা আমাদের অবকাঠামো ও জনজীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই এখন থেকেই সচেতনতা বৃদ্ধি, ভবন নির্মাণে সতর্কতা এবং জরুরি সেবা প্রস্তুতির মাধ্যমে আমরা এই ঝুঁকি মোকাবিলা করতে পারি।